আজকের পোস্টে তোমাকে স্বাগতম। আজকের এই পোস্টে আমরা একটি ভাবসম্প্রসারণ দেখব – মুকুট পরা শক্ত, কিন্তু মুকুট ত্যাগ করা আরও কঠিন। এই ভাবসম্প্রসারণটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি ভাবসম্প্রসারণ। এটি অনেকবার পরীক্ষায় কমন পড়ে।
তুমি যেই শ্রেণিতেই পড়োনা কেন – এই ভাবসম্প্রসারণটি যদি তুমি মুখস্ত রাখো তাহলে তোমার পরীক্ষায় কমন পড়ার চান্স অনেক বেশি। আর এইজন্যই আজকে আমরা একটি খুবই সহজ এবং মুখস্ত করার মতো ভাবসম্প্রসারণ নিয়ে এসেছি।
তাহলে চলো, শুরু করা যাক।
মুকুট পরা শক্ত, কিন্তু মুকুট ত্যাগ করা আরও কঠিন
মুলভাব : সমাজ ও রাষ্ট্রের নেতৃত্ব দেওয়া সৌভাগ্যের ব্যাপার। কিন্তু নেতৃত্ব সহজে লাভ করা যায় না। আবার বহু সাধনায় লাভ করা নেতৃত্ব ত্যাগ করা আরও বেশি কঠিন।
সম্প্রসারিত ভাব : সবাই সমাজকে নেতৃত্ব দানের আশা পোষণ করে। কারণ দেশ ও জাতিকে নেতৃত্ব দিতে পারা অত্যন্ত সম্মানের বিষয় । যদিও নেতৃত্বের গুণ বা ক্ষমতা সবার মধ্যে থাকে না। এটি বলতে গেলে একটি ঐশ্বরিক দান। বস্তুত নেতৃত্বের আসনে বসা অত্যন্ত কঠিন কাজ। কেউ কখনো ডেকে নিয়ে কাউকে নেতা বানায় না। জনগণের সাথে দীর্ঘদিন কাজ করে ও তাদের জন্য আত্মত্যাগ স্বীকার করেই কেবল তাদের আস্থা লাভ করা যায়। আমরা যাঁদের ক্ষণজন্মা নেতা এবং জনপ্রিয় শাসক হিসেবে জানি, তাঁদের জীবন সংগ্রামমুখর এবং নির্যাতন-নিপীড়নে জর্জরিত। তাঁরা দেশ-জাতি ও মানুষের কল্যাণে অবর্ণনীয় দুঃখকষ্ট ও জেলজুলুম ভোগ করেন। গণমানুষের স্বার্থে জীবন উৎসর্গ করার প্রত্যয় প্রদর্শনের পরই জনগণ তাঁদের নেতৃত্বের প্রতি আস্থা স্থাপন করে। আধুনিককালে ক্ষমতায় সমাসীন হবার জন্য নির্বাচনে জিততে হয়। কিন্তু নির্বাচনে জয়ী হয়ে রাষ্ট্র ও সমাজের নেতৃত্বের আসীন হওয়া বা মাথায় মুকুট পরার কোনো ছেলেখেলা নয়। দায়িত্বের ভারে প্রতি মুহূর্ত ক্লান্ত থাকতে হয়। জনগণের রায় পাওয়া সৌভাগ্যের বিষয় হলেও আসল পরীক্ষাটি দিতে হয় ক্ষমতায় আরোহণের পর। জনগণের দেওয়া গুরুভার দায়িত্ব পালনে সামান্য ব্যত্যয় ঘটলে জনপ্রিয় নেতাকেও গণধিকৃত হতে হয়। বিশেষ করে আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের সমস্যাবহুল দেশগুলোতে ক্ষমতায় গিয়ে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করা খুব কঠিন। তাই বলে শোভিত মুকুট অর্থাৎ ক্ষমতা ও দায়িত্ব থেকে সরে আসারও কোনো উপায় নেই । ক্ষমতা ছেড়ে দিলেও জনগণ ক্ষমা করবে না। তাই ক্ষমতাসীন হবার পর অর্পিত দায়িত্ব পালনে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাওয়াই সঠিক পন্থা। দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিকেই নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে সতর্ক থাকা আবশ্যক ।
মন্তব্য : দায়িত্ব ও কর্তব্যের প্রতি নিবেদিত থাকাই যেকোনো সচেতন মানুষের কাজ। উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ কেবল নয়, যেকোনো দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিকেই নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনের ব্যপারে সতর্ক থাকা আবশ্যক।
আরও পড়ুনঃ
- ভাবসম্প্রসারণ: আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে, কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে
- ভাবসম্প্রসারণ লেখার নিয়ম ও পদ্ধতি
- সারমর্মঃ সব সাধকের বড় সাধক আমার দেশের চাষা
- সারমর্মঃ আমার একার সুখ সুখ নহে ভাই, সকলের সুখ সখা
- সারমর্মঃ গাহি তাহাদের গান, ধরণীর বুকে দিল যারা আনি ফসলের ফরমান
সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করছি আমাদের এই পোস্ট থেকে ভাব সম্প্রসারণ যেটি তুমি চাচ্ছিলে সেটি পেয়ে গিয়েছে। যদি তুমি আমাদেরকে কোন কিছু জানতে চাও বা এই ভাব সম্প্রসারণ নিয়ে যদি তোমার কোনো মতামত থাকে, তাহলে সেটি আমাদের কমেন্টে জানাতে পারো। আজকের পোস্টে এই পর্যন্তই, তুমি আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করে আমাদের বাকি পোস্ট গুলো দেখতে পারো।