Regular Content

৭টি কার্যকরী পড়ালেখার টিপস

পড়ালেখার টিপস - কিভাবে আরও কম সময়ে বেশি পড়া শেষ করতে পারবে?

আমাদের জীবনে সবারই প্রায় একটাই সমস্যা, পড়া এবং যা পড়ছি তা মনে রাখা। প্রতিবছর আমাদের বাবা-মা এর থেকে আমরা শুনি যে এবার ভালো ফলাফল করতেই হবে, এইবার আর খারাপ রেজাল্ট করলে হবেনা। কিন্তু, আসলে এই ভালো রেজাল্ট করা যাবে কিভাবে? যারা ভালো রেজাল্ট করে তারা এমন কিই বা পড়ে? আমি দিনে ৩-৪ ঘন্টা পড়ি তাও আমার পড়া মনে থাকেনা বা ভালো রেজাল্ট হয়না কেন? এইসকল প্রশ্নের সমাধান পাবে আজকের এই পড়ালেখার টিপস পোস্টে, তাহলে চলো শুরু করা যাক। 

পড়ালেখার টিপস – কিভাবে পড়াশোনা করলে ভালো রেজাল্ট করা যায়?

এখানে পড়ালেখার কিছু কার্যকরী টিপস শেয়ার করা হলো যেগুল তোমার জীবনে ব্যবহার করলে হয়তো আরো ভালো ফলাফল পাবে।

পড়ার মাঝে মাঝে বিরতি নেয়া

আমরা যখন পড়তে বসি তখন আমাদের মনোযোগ থাকে ১০০% এ, এরপর কিছুক্ষন পরে আমাদের মনোযোগ লেভেল কমতে থাকে এবং এক পর্যায়ে আমরা কোন পড়ায় মনোযোগ ই পাইনা। তাই, এখানে আমাদের মনোযোগ ধরে রাখার সবথেকে ভালো উপায় হলো পড়ার মাঝে ছোট ছোট বিরতি দেয়া যাতে যেই কয়বারই ই আমরা বিরতি শেষ করে পড়তে বসে সেই কয়বার ই নতুন করে আকর্শন আসে। 

আপনার মনোযোগ এর ওপর ভিত্তি করে আপনি আপনার পড়ার সময় কতটুকু বিরতি নেবেন সেটা নির্ধারণ করতে পারেন। যেমন আপনার মনোযোগ টিকিয়ে রাখার শক্তি যদি খুবই কম হয় তাহলে আপনার পড়ার ২৫ মিনিট পর পর বিরতি নেয়া উচিত।কিন্তু আপনি যদি বেশ কিছুক্ষণ মনোযোগ ধরে রাখতে পারেন তাহলে চেষ্টা করবেন ৪৫ মিনিট পরপর ব্রেক নেওয়ার। ব্রেক নেয়ার পদ্ধতি অবলম্বন করে আপনার যদি কোন উপকার হয় তাহলে আমাদেরকে কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। চলুন এবার চলো যাওয়া যাক পরের পদ্ধতিতে।

See also  ভাবসম্প্রসারণঃ বন্যেরা বনে সুন্দর শিশুরা মাতৃক্রোড়ে

বুঝে পড়, মুখস্ত করে নয়

এই অংশটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তুমি যদি কোন পড়া না বুঝে শুধুমাত্র মুখস্ত করে পরীক্ষায় লেখার জন্য পড়ো তাহলে এখানে তোমার পড়াটা ভুলে যাওয়ার চান্স অনেক বেশি। হয়তো তোমার সীমিত একটা সময়ের জন্য পরাটা মনে থাকবে কিন্তু পরবর্তীতে যখন তোমার কোনো ভর্তি পরীক্ষা বা কোনো গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় এই প্রশ্নটা আসবে তখন হয়তো তোমার লিখতে সমস্যা হবে। 

উদাহরণ হিসেবে চিন্তা করা যাক, তুমি একটা রসায়নের অধ্যায় পড়ছো, সেখানে হয়তো একটা সূত্র নিয়ে কথা বলা হচ্ছে,  সূত্র টা অনেক বড় এবং কঠিন। এখন তুমি যদি এই সূত্রটা কিভাবে আসলো, সূত্রের কোন চিহ্নের নাম কি, কোন চিহ্নের মান কত, এগুলো না জেনে শুধুমাত্র মুখস্ত করো, সূত্রের ব্যাখ্যা টা মুখস্ত করে দাও তাহলে কিন্তু তোমার কোন লাভ হচ্ছে না কারণ ওই সূত্র থেকে যখন কোনো সৃজনশীল প্রশ্ন তোমাকে দেয়া হবে অথবা নিজে থেকে লেখার জন্য কিছু দেওয়া হবে তখন তোমার সেই উত্তরটা দেয়ার সময় জটিলতায় পড়তে হবে।

তাই সবসময় চেষ্টা করবে যা পড়ছো তা আগে বুঝতে এবং এরপর মুখস্ত করতে। কারণ দিনশেষে তুমি যা করছ তা যদি তোমার মনে না থাকে তাহলে কিন্তু তোমার কোন লাভ হচ্ছে না। যেটুকু পড়া তুমি পড়লে সেটুকু বৃথা গেল। চলো এবার চলে যাওয়া যাক পরের পদ্ধতিতে যেটা ব্যবহার করে তুমি তোমার পড়ালেখাকে আরও সহজ করতে পারবে।

যেইদিনের পড়া সেইদিন শেষ কর

আমাদের মধ্যে অনেকেই প্রতিদিনের পড়া প্রতিদিন শেষ করে না, পড়া জমিয়ে রেখে দেয় পরবর্তীতে পড়ে একসাথে শেষ করার জন্য। কিন্তু পরবর্তীতে সেই পড়াটা শেষ করার সময় খুব সমস্যায় পড়তে হয়।  যখন আমরা সেই পড়াটা পড়তে বসি তখন আর নির্দিষ্ট পরিমাণের সময় থাকে না যার কারণে আমাদের ওপর চাপ বৃদ্ধি পায় এবং দিনশেষে আমরা সেই পড়াটা করতে পারিনা। 

এখানে আমরা কি করতে পারি যেটা করলে আমাদের আসলেই উপকার হবে? আমরা যদি প্রতিদিন যে পড়া আমাদের নির্ধারণ করে দেওয়া হয় সেই পড়াটা প্রতিদিনই শেষ করে ফেলি তাহলে কিন্তু আর পরবর্তীতে যে আমাদের চাপের সম্মুখীন হতে হচ্ছে না। 

See also  ভাবসম্প্রসারণঃ অভাব অল্প হলে দুঃখও অল্প হয়ে থাকে

এটা শুনতে সহজ মনে হলেও করতে কিন্তু সহজ না, আমরা সব সময় কালকের জন্য পড়া জমিয়ে রেখে দেই কিন্তু সেই কাল আর কখনোই আসেনা। এটা করা যাবে না, তোমার উচিত তোমার প্রতিদিনের পড়া প্রতিদিন শেষ করা। তাহলে দেখবে একটা সময়ে গিয়ে তোমার ওপর আরো চাপ সৃষ্টি হচ্ছে না এবং তুমি খুব অনায়াসেই পড়া গুলো শেষ করতে পারছো।

অন্যকাউকে শেখাও

যখন তুমি নতুন কিছু শিখছো সবসময় চেষ্টা করবে অন্য কাউকে সেই জিনিসটা শেখাতে, এর মাধ্যমে যাওয়া হবে তুমি যে জিনিসটা সেটা যদি অন্য কাউকে সেখানে যাও তাহলে তোমার প্র্যাকটিস হয়ে যাবে এবং তুমি বুঝতে পারবে তোমার ঠিক কোন জায়গায় সমস্যা রয়ে গেছে। 

এটার জন্য তুমি ফেসবুকে তোমার স্কুলের গ্রুপে একটা লাইভ স্ট্রিম করে সবাইকে সেখানে বোঝাতে পারো অথবা তুমি চাইলে নিজের একটা পেইজ করে বা নিজের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে লাইভে গিয়ে কাউকে কিছু শেখাতে পারো। এছাড়াও তুমি যদি চাও তাহলে কিন্তু একটা ইউটিউব চ্যানেল খুলে সেখানে পড়ালেখার ভিডিও দিয়ে অন্যকে শেখাতে পারো এবং নিজের অনুশীলন করে ফেলতে পারো। বাংলাদেশে এমন অনেকে ইউটিউব চ্যানেল আছে যেখানে তারা পড়ালেখা বিষয়ক ভিডিও দিয়ে অনেক বিখ্যাত হয়ে গিয়েছে, তাই তুমিও চাইলে চেষ্টা করে দেখতে পারো অন্যকে শিখিয়ে আসলেই কি তোমার কোন লাভ হবে কিনা।

অনেক সোর্স মিলিয়ে পড়ো

তুমি যদি এমন ছাত্র হয়ে থাকো যে কিনা শুধুমাত্র পাঠ্য বই থেকে পড়ে এবং এর বাইরে কোন সোর্স বা বই ব্যবহার করে না তাহলে তোমার ওই বিষয়টা সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা থাকার চান্স খুব একটা বেশি না।ধরা যাক তুমি বাংলার যে কোন একটা ইতিহাস নিয়ে পড়ছো, এখন এখানে তোমার বইতে যতটুকু তথ্য দেওয়া আছে ততটুকু তোমার জানার আগ্রহকে নাও মেটাতে পারে, হয়তো তুমি আরো জানতে চাও, বা কোন কিছু শেখার জন্য পরিপূর্ণ একটা ধারণা থাকা কিন্তু অনেক গুরুত্বপূর্ণ। 

See also  রচনাঃ স্বাধীনতা দিবস

তাই সবসময় চেষ্টা করবে শুধুমাত্র বই থেকে না পড়ে অন্যান্য যেসব সোর্স আছে যেমন অনলাইনে ভিডিও দেখা, অনলাইনে সেই বিষয়ক আর্টিকেল পড়তে পারো বা খবরের কাগজে যদি সেই সম্পর্কিত কোন নিউজ পাবলিশ হয়ে থাকে সেটা পড়ে তুমি কিন্তু সেই ঘটনাটা সম্পর্কে আরো বিস্তারিত ধারণা লাভ করতে পার। 

তাই নেক্সট টাইম যখনি পড়বে তখন চেষ্টা করবে আরেকটু ভালো ধারণা লাভের জন্য সকল সোর্স মিলিয়ে পড়তে। 

নিবিড় মনোনিবেশ

কোন কিছু ভালোভাবে বুঝে নিচ থেকে পড়ার জন্য নিবিড় মনোনিবেশ অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা ভূমিকা পালন করে। তুমি যদি এমন কোন জায়গায় পড়ো যেখানে তোমাকে অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে, তুমি পড়ালেখা সম্পূর্ণভাবে মনোযোগ দিতে পারছ না, তাহলে কিন্তু সেই যায়গাটা তোমার জন্য পারফেক্ট না। যদি সম্ভব হয় চেষ্টা করবে নতুন কোন পড়ার জায়গা খুঁজতে যেখানে সচরাচর কেউ তোমাকে ডিস্টার্ব করার জন্য আসবে না বা সেই সকল জায়গায় তুমি ঘুমিয়ে পড়ো না, তোমার অন্যান্য কাজে তুমি সেটাকে ব্যবহার করো না। এর ফলে সেটা হবে, যখন তুমি সেই জায়গায় গিয়ে বসবে তখন তোমার মধ্যে পড়ার একটা মনোভাব তৈরি হবে যার ফলে তোমার দ্রুত পড়ায় মন বসানোর সহজ হবে।

ছোট ছোট লক্ষ্য তৈরি করে পড়া

এই পদ্ধতি টা খুবই ইন্টারেস্টিং এবং আমি নিজে এই পদ্ধতিটা বহুদিন ধরে ব্যবহার করে আসছি এবং আমার কাজে লাগছে। পদ্ধতিটা খুবই সহজ, যখন তুমি কোন চ্যাপ্টার পড়বে তখন চেষ্টা করবে সে চ্যাপ্টারটা কে ছোট ছোট অংশে ভাগ করে নিতে এবং প্রত্যেকটা অঙ্গ শেষ করার জন্য নিজের জন্য একটা পুরস্কার রাখবে। 

এর ফলে যেটা হবে, তুমি পুরস্কার পাওয়ার জন্য হলেও সেই চ্যাপ্টার এর ছোট ছোট অংশগুলো শেষ করতে করতে একসময় গিয়ে সেই পুরো চ্যাপ্টার টা খুব সহজেই ইন্টারেস্টিং ভাবে শেষ করে ফেলতে পারবে।

এই ছিল আজকের পোস্ট যেখানে আমি পড়ালেখার টিপস নিয়ে আলোচনা করেছি। যদি তোমার কাছে অন্য কোন টিপস থেকে থাকে বা তোমার কাজে লেগেছে এমন কোন পদ্ধতি থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই সেটা আমাদেরকে কমেন্টে শেয়ার করবে। আমরা চেষ্টা করব কনটেন্ট যখন আপডেট করা হবে তখন তোমার নাম দিয়ে সেটা পাবলিশ করে দিতে। 

Related posts

আবেদন পত্রঃ ছাড়পত্র চেয়ে প্রধান শিক্ষকের নিকট একটি আবেদন পত্র লেখ

Swopnil

অনুচ্ছেদঃ বাংলাদেশের কৃষক

Swopnil

রচনাঃ বিজয় দিবস

Swopnil

Leave a Comment