আজকের পোস্টে তোমাকে স্বাগতম। আজকের এই পোস্টে আমরা একটি প্রতিবেদন দেখব – পরিবেশগত ভারসাম্যের জন্য চাই বৃক্ষরোপণ’ -এ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন রচনা কর। এইটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিবেদন। এটি অনেকবার পরীক্ষায় কমন পড়ে।
তুমি যেই শ্রেণিতেই পড়োনা কেন – এইটি যদি তুমি মুখস্ত রাখো তাহলে তোমার পরীক্ষায় কমন পড়ার চান্স অনেক বেশি। আর এইজন্যই আজকে আমরা একটি খুবই সহজ এবং মুখস্ত করার মতো প্রতিবেদন নিয়ে এসেছি।
তাহলে চলো, শুরু করা যাক।
পরিবেশগত ভারসাম্যের জন্য চাই বৃক্ষরোপণ’ -এ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন রচনা কর
পরিবেশগত ভারসাম্যের জন্য চাই বৃক্ষরোপণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
৫ জুন ২০১৮
আমাদের চারপাশে আলো-বাতাস, মাটি-পানি, নদীনালা, পাহাড়-পর্বত, পশু-পাখি নিয়ে যে প্রাকৃতিক অবস্থান গড়ে ওঠেছে তা-ই পরিবেশ। পরিবেশের সঙ্গে মিলেমিশেই মানুষ এবং জীবকূলের বিকাশ ঘটে। পরিবেশগত ভারসাম্যের ওপর জীবকূলের অস্তিত্ব নির্ভরশীল। পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষার জন্য সবার আগে প্রয়োজন প্রকৃতির স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্যগুলোকে অক্ষুণ্ণ রাখা। বৃক্ষ প্রকৃতির অমূল্য সম্পদ। পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষের অবদান অসামান্য। পরিবেশের বিরুদ্ধে যখন থেকে মানুষের আগ্রাসন শুরু হয়েছে তখন থেকেই সূত্রপাত ঘটেছে পরিবেশ বিপর্যয়ের। জনসংখ্যার ক্রমবর্ধমান চাপের ফলে প্রাকৃতিক সম্পদ—— ভূমি, পানি ও বায়ুর ওপর চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উদ্ভিদজগৎ ও প্রাণিজগৎ। উজাড় হচ্ছে বন, তৈরি হচ্ছে অপরিকল্পিত নগর। কলকারখানার বর্জ্য, যানবাহনের কালোধোয়া, রাসায়নিক তেজস্ক্রিয়তা, চরমভাবে পরিবেশকে ধ্বংস করছে। রাসায়নিক সার, কীটনাশকের অপরিকল্পিত এবং মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্ট করছে।
বৃক্ষ মানুষের পরম বন্ধু, পরিবেশের অমূল্য সম্পদ। প্রাকৃতিক শোভাবর্ধনের পাশাপাশি বৃক্ষ মানুষের জীবনের আবশ্যকীয় মৌলিক চাহিদাও মিটিয়ে থাকে। সবুজ-শ্যামল বৃক্ষরাজি দূষিত বাতাসকে শোধন করে প্রাণিকূলকে বাঁচিয়ে রাখে। বৃক্ষ অক্সিজেন ত্যাগ করে এবং কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। বৃক্ষ আবহাওয়া ও জলবায়ুর ভারসাম্য বজায় রাখে। বৃক্ষ বাতাসে জলীয়বাষ্পের ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে আবহাওয়াকে শীতল রাখে এবং বৃষ্টিপাতে সাহায্য করে। ভূমিক্ষয়রোধে ও ঝড়ো পরিবেশ নিয়ন্ত্রণেও বৃক্ষের ভূমিকা অপরিসীম। ঘর-বাড়ি নির্মাণ, আসবাবপত্র তৈরি, জলযান নির্মাণ, শিল্পের কাঁচামাল যোগান, সুস্বাদু ফলদান— এ সবকিছুর উৎস বৃক্ষ। বৃক্ষ নিঃশর্তভাবে আমাদের নানা প্রয়োজন মিটিয়ে থাকে ।
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বৃক্ষের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। যেকোনো দেশের মোট আয়তনের ২৫ ভাগ বনভূমি থাকা প্রয়োজন ৷ কিন্তু নির্বিচারে বৃক্ষনিধনের ফলে বাংলাদেশে বর্তমানে মাত্র ১৬ ভাগ বনভূমি রয়েছে। উল্লেখ্য যে, এ ১৬ ভাগ বনভূমিও নিরাপদ নয়। সুষম প্রাকৃতিক ভারসাম্যের জন্য একটি দেশের মোট আয়তনের ৩৬ শতাংশ বন থাকা প্রয়োজন ৷
বৃক্ষ মানুষের উপকারী বন্ধু এবং পরিবেশের অপরিহার্য সম্পদ হওয়া সত্ত্বেও আমাদের সচেতনতার অভাবে প্রতিনিয়তই বৃক্ষনিধন চলছে। এভাবে নির্বিচারে বৃক্ষনিধনের ফলে বাংলাদেশসহ বিশ্ব-পরিবেশে দেখা দিয়েছে গ্রিনহাউস প্রতিক্রিয়া। আমাদের দেশে প্রতিবছরই নদীভাঙ্গন, ভূমিধস ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে প্রচুর পরিমাণে বনজসম্পদ কমে যাচ্ছে, ফলে প্রাকৃতিক ভারসাম্যও বিনষ্ট হচ্ছে। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় ব্যাপকভাবে ‘উপকূলীয় সবুজ বেষ্টনী’ ও ‘সামাজিক বনায়ন’ কর্মসূচি বনভূমি সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বনাঞ্চল সৃষ্টি ও বন-সম্প্রসারণের বিশেষ প্রয়োজন। বৃক্ষরোপণের প্রয়োজনীয়তা ও সুরুল সম্পর্কে রেডিও, টেলিভিশন ও সংবাদপত্রে ব্যাপক প্রচারণা চালানো প্রয়োজন। অধিক হারে বৃক্ষরোপণ করে পরিবেশকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। এ অঙ্গীকার নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে সকলকে। দেশ ও জাতির কল্যাণে পরিবেশ সুরক্ষায় বৃক্ষরোপণ অভিযানকে জোরদার করতে হবে। তবেই মৃত্তিকাবৃক্ষ সবুজের সমারোহে ভরে ওঠবে, প্রাকৃতিক পরিবেশ সুরক্ষিত হবে এবং বৃক্ষের শোভা সকলের চোখ জুড়াবে দেহ ও মনকে রাখবে সজীব ও প্রশান্ত ।
প্রতিবেদন তৈরির সময় সংযুক্তি
প্রতিবেদকের নাম ও ঠিকানা : ‘ক’ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা।
প্রতিবেদকের শিরোনাম : পরিবেশগত ভারসাম্যের জন্য চাই বৃক্ষরোপণ ।
বিকেল ৫.০০ টা, তারিখ : ৩০/০৫/২০১৮ খ্রি.
২ কপি ছবি
(১) উপকূলীয় সবুজবেষ্টনী
(২) সামাজিক বনায়ন ।
সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করছি আমাদের এই পোস্ট থেকে যে আবেদন পত্রটি তুমি চাচ্ছিলে সেটি পেয়ে গিয়েছ। যদি তুমি আমাদেরকে কোন কিছু জানতে চাও বা এই পত্র নিয়ে যদি তোমার কোনো মতামত থাকে, তাহলে সেটি আমাদের কমেন্টে জানাতে পারো। আজকের পোস্টে এই পর্যন্তই, তুমি আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করে আমাদের বাকি পোস্ট গুলো দেখতে পারো।