আজকের পোস্টে তোমাকে স্বাগতম। আজকের এই পোস্টে আমরা একটি ভাবসম্প্রসারণ দেখব – আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে, আসে নাই কেহ অবনী পরে, সকলের তরে সকলে আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের তরে। এই ভাবসম্প্রসারণটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি ভাবসম্প্রসারণ। এটি অনেকবার পরীক্ষায় কমন পড়ে।
তুমি যেই শ্রেণিতেই পড়োনা কেন – এই ভাবসম্প্রসারণটি যদি তুমি মুখস্ত রাখো তাহলে তোমার পরীক্ষায় কমন পড়ার চান্স অনেক বেশি। আর এইজন্যই আজকে আমরা একটি খুবই সহজ এবং মুখস্ত করার মতো ভাবসম্প্রসারণ নিয়ে এসেছি।
তাহলে চলো, শুরু করা যাক।
আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে, আসে নাই কেহ অবনী পরে, সকলের তরে সকলে আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের তরে
মূলভাব: মানুষের পারস্পরিক নির্ভরশীলতা ও সহমর্মিতা সুষম জীবনবিকাশের জন্য অপরিহার্য। স্বার্থান্ধ হয়ে জীবন যাপনে সুখ এবং সার্থকতা কোনোটিই নেই ।
সম্প্রসারিত ভাব : সৃষ্টির আদিতে প্রতিকূল পরিবেশে নিজেদের টিকিয়ে রাখার জন্য এবং পরবর্তীতে জীবনের সুষম বিকাশের জন্য মানুষ রচনা করেছে সমাজ। সমাজের বিমূর্ত কাঠামোটির মধ্যে এসে মানুষ পরস্পর নির্ভলশীলতায় জীবনকে সর্বপ্রকারের সুন্দর করে তুলেছে। আজকের বিশ্বায়নের যুগে মানুষ শুধু নিজের সমাজে আবদ্ধ নয়। সে নিজের সমাজের কেবল সদস্য নয়, ব্যাক্তমাত্র আজ বিশ্বসমাজের সদস্য, বিশ্ব নাগরিক। আর মানুষের পরস্পর নির্ভরশীলতা ও সহযোগিতার পরিধিও আজ বিশ্বপটভূমিতে বিস্তৃত। পারত না ৷ পণ্য বিনিময় প্রথার মাধ্যমে মানুষ নিজেদের প্রয়োজন পূরণ করেছে সেদিন। আজকের শিল্পযুগে পৃথিবীর প্রতিটি দেশ একদা স্বপোষিত অর্থনীতি চালু ছিল যখন মানুষ তার প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিজেরাই উৎপাদন করতো। তার পরেও মানুষ একা চলতে পরস্পর লেনদেন, সহযোগিতা ও পণ্য বিনিময় ছাড়া চলতে পারে না। এটা তো গেল অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতার দিক। কিন্তু মানুষের ক্ষেত্রে সব চেয়ে বড় ব্যাপার তার মানসিক সহযোগিতা ও সহমর্মিতার বিষয়। সুখে-দুঃখে, আনন্দ-বেদনায়, বিপদে-আপদে মানুষ দিনে পৃথিবীর যেকোনো ধরনের প্রান্তে যেকোনো মানবিক বিপর্যয়ে সারা বিশ্বের মানুষ ছুটে আসে। তাই মানবিক সহযোগিতার নিজে অন্যের পাশে দাঁড়াতে চায়, অন্যকেও নিজের পাশে আশা করে। পরস্পর এ ভাগাভাগিতে জীবন হয়ে ওঠে মধুর । আজকের বিষয়টিও আজ বিশ্বজনীন রূপ নিয়েছে। এ পারস্পরিক নির্ভরশীলতা ও সহযোগিতার বিষয়টিকে কেউ অস্বীকার করতে চাইলে সে নিজেকে স্বার্থান্ধ, নিঃসঙ্গ ও বিচ্ছিন্ন হিসেবে আবিষ্কার করতে বাধ্য। এতে জীবনের শ্রীবৃদ্ধি ঘটে না, জীবন হয়ে পড়ে অর্থহান ও মানবিকতাশূন্য ৷
মন্তব্য : হজরত মুহাম্মদ (স.), যিশুখ্রিষ্ট, গৌতম বুদ্ধ, শ্রী চৈতন্য প্রমুখ ক্ষণজন্মা মহাপুরুষ মানুষকে পারস্পরিক সহযোগিতার বাণীই শুনিয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ
- ভাবসম্প্রসারণ: আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে, কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে
- ভাবসম্প্রসারণ লেখার নিয়ম ও পদ্ধতি
- সারমর্মঃ সব সাধকের বড় সাধক আমার দেশের চাষা
- সারমর্মঃ আমার একার সুখ সুখ নহে ভাই, সকলের সুখ সখা
- সারমর্মঃ গাহি তাহাদের গান, ধরণীর বুকে দিল যারা আনি ফসলের ফরমান
সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করছি আমাদের এই পোস্ট থেকে ভাব সম্প্রসারণ যেটি তুমি চাচ্ছিলে সেটি পেয়ে গিয়েছ। যদি তুমি আমাদেরকে কোন কিছু জানতে চাও বা এই ভাব সম্প্রসারণ নিয়ে যদি তোমার কোনো মতামত থাকে, তাহলে সেটি আমাদের কমেন্টে জানাতে পারো। আজকের পোস্টে এই পর্যন্তই, তুমি আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করে আমাদের বাকি পোস্ট গুলো দেখতে পারো।
Leave a Reply