বাংলানির্মিতিভাবসম্প্রসারণ

ভাবসম্প্রসারণঃ কীর্তিমানের মৃত্যু নেই

কীর্তিমানের মৃত্যু নেই

আজকের পোস্টে তোমাকে স্বাগতম। আজকের এই পোস্টে আমরা একটি ভাবসম্প্রসারণ দেখব – কীর্তিমানের মৃত্যু নেই। এই ভাবসম্প্রসারণটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি ভাবসম্প্রসারণ। এটি অনেকবার পরীক্ষায় কমন পড়ে।

তুমি যেই শ্রেণিতেই পড়োনা কেন – এই ভাবসম্প্রসারণটি যদি তুমি মুখস্ত রাখো তাহলে তোমার পরীক্ষায় কমন পড়ার চান্স অনেক বেশি। আর এইজন্যই আজকে আমরা একটি খুবই সহজ এবং মুখস্ত করার মতো ভাবসম্প্রসারণ নিয়ে এসেছি।

তাহলে চলো, শুরু করা যাক।

কীর্তিমানের মৃত্যু নেই

মুলভাব : মানুষের জীবনে মহৎকর্মের কোনো তুলনা নেই। কর্মের গুণেই যেকোনো মানুষ মহাকালের বুকে আত্মপ্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়।

সম্প্রসারিত ভাব : মহাকালের মহাস্রোতে মানুষের জীবন ক্ষণকালের পারাপার মাত্র। ক্ষুদ্র জীবনপরিসর শেষে মানুষকে আবারও হারিয়ে যেতে হয় মহাকালের বুকে। কিন্তু মানুষের জীবন অনেক বেশি তাৎপর্যের দাবি রাখে। জৈবিকভাবে বেঁচে থাকার মধ্যে নির্ধারণ করা হলে জীবনের অর্থকে সংকীর্ণ করা হয়। কারণ মানুষ অমৃতের সন্তান। তার দৈহিক অস্তিত্বের সমাপ্তিতে জীবনের সমাপ্তি ঘটে না। যা অন্যান্য প্রাণীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। মানুষ মহাকালকে জয় করে অমরত্ব অর্জন করতে পারে। সৃষ্টির আদিলগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত এমন কিছু মানুষ পৃথিবীতে আগমন করে এ ধরাধামকে ধন্য করেছেন, যাঁদের নাম কালের মলিনতায় ধুলোয় ঢাকা পড়ে না । হজরত মুহাম্মদ (স.), ঈসা (আ), গৌতমবুদ্ধ, চৈতন্যদেব প্রমুখ মহাকালের মহানাম হিসেবে স্বীকৃত। প্লেটো, এরিস্টটল, হোমার, বার্নার্ড শ, শেক্সপীয়র, রবীন্দ্রনাথ, কাজী নজরুল ইসলাম ছাড়াও জর্জ ওয়াশিংটন, অ্যাডাম স্মিথ, মহাত্মা গান্ধী প্রমুখ অমর ব্যক্তিত্বের উদাহরণ। এসব ক্ষণজন্মা ব্যক্তিত্বের এ অমরত্ব লাভের মূলে রয়েছে তাঁদের মহৎকর্মের অবদান। তাঁরা স্ব স্ব ক্ষেত্রে সাধনা ও কর্ম দ্বারা বিশ্ববাসীর কল্যাণ সাধন করে গেছেন। তাঁদের পার্থিব জীবন জৈবিক নিয়মে হারিয়ে গেছে বটে, কিন্তু কীর্তিগাথার মধ্য তাঁরা হয়ে আছেন অমর। মৃত্যু তাঁদের কীর্তির কাছে পরাজিত, পরাভূত। প্রতিটি দেশ, জাতি ও সমাজে এ ধরনের অসংখ্য কীর্তিমান মানুষের জন্ম হয়েছে, যারা নিজেদের কর্মের মধ্য দিয়ে চিরদিন বেঁচে থাকবেন। নাম, বংশ পরিচয়, আর্থিক প্রতিপত্তি এবং সামাজিক মর্যাদাকে তাঁরা অতিক্রম করে মহৎকর্মের দ্বারা মানুষের মনে স্থান করে নিয়েছেন। তাঁরা মানুষের আদর্শ, আলোকবর্তিকার মতোই অনুসরণীয়। তাই আমাদের জীবনকে সৎকর্মের সাধনায় ব্যাপৃত করার চেতনা দ্বারা পরিচালিত করতে হবে। কীর্তিমান হবার প্রেরণায় হতে হবে উজ্জীবিত। এর মাধ্যমে দেশ, জাতি ও মানবতা যেমন উপকৃত হবে তেমনি আমরাও অমরত্ব লাভ করতে পারবো।

See also  ভাবসম্প্রসারণঃ বন্যেরা বনে সুন্দর শিশুরা মাতৃক্রোড়ে

মন্তব্য : মানুষ মরণশীল কিন্তু তার কীর্তি অমর। তাই ক্ষুদ্র জীবনকে মহৎকর্মের দ্বারা অর্থবহ করার সাধনায় আমাদের আত্মনিয়োগ করতে হবে।

আরও পড়ুনঃ

সম্পূর্ণ পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করছি আমাদের এই পোস্ট থেকে ভাব সম্প্রসারণ যেটি তুমি চাচ্ছিলে সেটি পেয়ে গিয়েছ। যদি তুমি আমাদেরকে কোন কিছু জানতে চাও বা এই ভাব সম্প্রসারণ নিয়ে যদি তোমার কোনো মতামত থাকে, তাহলে সেটি আমাদের কমেন্টে জানাতে পারো। আজকের পোস্টে এই পর্যন্তই, তুমি আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করে আমাদের বাকি পোস্ট গুলো দেখতে পারো।

Related posts

রচনাঃ শীতের সকাল / শীতকাল

Swopnil

আবেদন পত্রঃ বন্যার্তদের জন্য প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী চেয়ে সচিবের নিকট আবেদন পত্র লেখ

Swopnil

রচনাঃ বাংলাদেশের ফল

Swopnil

Leave a Comment